বাংলাদেশে ফুড ডেলিভারি বা ক্যাটারিং এর ব্যবসা দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। তবে, অনেক রেস্তোরাঁ এখনও ফুডপাণ্ডা বা পাঠাও ফুড অথবা ফুডির মতো কোনো ফুড ডেলিভারি অ্যাপে যুক্ত হয়নি। লালামুভের মতো লজিস্টিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় রেস্তোরাঁও তাদের ডেলিভারি সেবা চালু করতে পারে।
আসুন জেনে নিই কীভাবে আপনি লালামুভের সাথে আপনার খাদ্য ডেলিভারি ব্যবসাকে আরও কার্যকর ও লাভজনক করতে পারেন।
স্বাধীন ডেলিভারি সিস্টেম: ফুড ডেলিভারি অ্যাপের উপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজস্ব ডেলিভারি সেবা চালু করুন।
ফ্লেক্সিবল সার্ভিস: চাহিদা অনুযায়ী ডেলিভারি সেবা, যেকোনো সময়ে।
নো কমিশন: কোনো কমিশন নেই। লাভ পুরোটাই আপনার।
বিস্তৃত কভারেজ: ঢাকার যেকোনো জায়গায় ডেলিভারি।
ধরুন মতিঝিলের ঘরোয়া থেকে খিঁচুড়ি খেতে মনে চাচ্ছে মগবাজারের কোনো এক গ্রাহকের। পরিবারের অসুস্থ কোনো মেম্বারকে নিয়ে তিনি ঘরে বসেই খেতে চাচ্ছেন। চাইলেও তিনি ফুডপান্ডা বা ফুডি থেকে অর্ডার করতে পারবে না। কারণ রেস্টুরেন্টই খুঁজে পাবে না। ঠিক এই সিচুয়েশনে যদি ঘরোয়া রেস্টুরেন্টের কোনো হটলাইন নাম্বর থাকতো; তাহলে খুব সহজেই তিনি অর্ডার করতে পারতেন। লালামুভ সেই খাবার খুব সহজেই সংগ্রহ করে পৌঁছে দিত গ্রাহকের দোরগোড়ায়। ব্যবসার পরিসর বাড়ানোর এমন সুযোগ কেন নিচ্ছে না মোটামুটি পরিচিতি পাওয়া রেস্টুরেন্ট মালিকগণ?
চলুন জেনে নিই কমিশনভোগী ফুড ডেলিভারি অ্যাপ বাদ দিয়ে নিজে থেকেই কিভাবে কাছের বা দূরের কাস্টমারদের ফুড ডেলিভারির অর্ডার নিবেন এবং কিভাবে ডেলিভারি করবেন সে বিষয়ে:
1. স্বাধীন অর্ডার গ্রহণ সিস্টেম
হটলাইন সেটআপ: একটি ডেডিকেটেড ফোন লাইন যা হতে পারে আইপি ফোন বা মোবাইল নাম্বার যা হটলাইন হিসেবে ব্যবহার করে অর্ডার গ্রহণ করুন।
ওয়েবসাইট/ফেসবুক পেজ: নিজস্ব ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেজে অর্ডার ফর্ম যুক্ত করুন।
WhatsApp অর্ডার: মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে অর্ডার নিন।
2. দূরবর্তী এলাকায় সেবা প্রদান
এক্সটেন্ডেড ডেলিভারি জোন: লালামুভের মাধ্যমে আপনার ডেলিভারি এলাকা বাড়ান।
স্পেশাল মেনু: দূরের গ্রাহকদের জন্য বিশেষ মেনু তৈরি করুন যা সহজে পরিবহনযোগ্য।
প্রি-অর্ডার সিস্টেম: দূরের গ্রাহকদের জন্য আগাম অর্ডার নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।
3. মাল্টি-স্টপ ডেলিভারি ব্যবহার
ক্লাস্টার ডেলিভারি: একই এলাকার একাধিক অর্ডার একসাথে ডেলিভারি করুন। এতে ডেলিভারির খরচ কমবে কয়েক গুণ।
টাইম-স্লট বেজড অর্ডারিং: নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অর্ডার জমা করে একসাথে পাঠান।
4. লোকাল মার্কেটিং কৌশল
কমিউনিটি আউটরিচ: স্থানীয় ফেসবুক গ্রুপ ও কমিউনিটিতে প্রচার করুন।
লিফলেট বিতরণ: আশপাশের এলাকায় মেনু ও হটলাইন নম্বরসহ লিফলেট বিতরণ করুন।
লোকাল ইনফ্লুয়েন্সার: স্থানীয় ফুড ব্লগার বা ইনফ্লুয়েন্সারদের সহায়তা নিতে পারেন।
সোশ্যাল মিডিয়া পেইজ: ফেসবুক, ইন্সটাগ্রামে নিয়মিত পোস্ট করতে পারেন। কাস্টমারদের রিভিউ-সহ, বিভিন্ন অফার, এনগেজমেন্ট পোস্ট করতে পারেন।
5. গ্রাহক ডাটাবেস তৈরি
CRM সিস্টেম: গ্রাহকদের তথ্য সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণ করুন।
পারসোনালাইজড অফার: নিয়মিত গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার তৈরি করুন।
ফিডব্যাক লুপ: প্রতিটি অর্ডারের পর গ্রাহকের মতামত নিন।
6. মৌসুমি ও উৎসবভিত্তিক প্রচার
রমজান স্পেশাল: ইফতার ও সেহরি কম্বো প্যাক অফার করুন।
মনসুন মেনু: বর্ষার জন্য গরম ও স্বাস্থ্যকর খাবারের মেনু তৈরি করুন।
পহেলা বৈশাখ অফার: বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বিশেষ ডিসকাউন্ট দিন।
7. পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ
বায়োডিগ্রেডেবল প্যাকেজিং: পরিবেশবান্ধব প্যাকেজিং ব্যবহার করুন।
প্লাস্টিক-মুক্ত অপশন: গ্রাহকদের প্লাস্টিক-মুক্ত প্যাকেজিংয়ের বিকল্প দিন।
লোকাল সোর্সিং: স্থানীয় উৎপাদক থেকে উপকরণ সংগ্রহ করুন।
8. কর্মী প্রশিক্ষণ
হাইজিন ট্রেনিং: খাদ্য প্রস্তুত ও প্যাকেজিংয়ে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করুন।
কাস্টমার সার্ভিস: ফোন অপারেটরদের গ্রাহক সেবায় প্রশিক্ষণ দিন।
এফিশিয়েন্ট প্যাকিং: দ্রুত ও নিরাপদ প্যাকেজিংয়ের কৌশল শেখান।
কেস স্টাডি: পুরান ঢাকার বিরিয়ানি হাউস
পুরান ঢাকার একটি বিখ্যাত বিরিয়ানি হাউস, যারা কোনো ফুড ডেলিভারি অ্যাপে ছিল না, লালামুভের সাথে সহযোগিতা শুরু করার পর:
দূরবর্তী এলাকায় অর্ডার 60% বৃদ্ধি পেয়েছে।
মাল্টি-স্টপ ডেলিভারি ব্যবহার করে ডেলিভারি খরচ 25% কমেছে।
গ্রাহক সংখ্যা 45% বেড়েছে।
লালামুভের সহায়তায় বাংলাদেশের রেস্তোরাঁ মালিকরা নিজস্ব ডেলিভারি বিজনেস গড়ে তুলতে পারেন, বিশেষ করে যারা বড় ফুড ডেলিভারি অ্যাপগুলোতে যুক্ত নন। এই বাস্তবসম্মত কৌশলগুলি অনুসরণ করে, আপনি আপনার গ্রাহক বেস বাড়াতে, খরচ কমাতে এবং সামগ্রিক ব্যবসায়িক দক্ষতা উন্নত করতে পারেন। মনে রাখবেন, সফলতার চাবিকাঠি হল স্থানীয় চাহিদা বোঝা, গ্রাহক সেবায় মনোযোগ দেওয়া, এবং নিরন্তর উদ্ভাবন।