ঢাকায় ফ্ল্যাট কেনার আগে বিবেচ্য বিষয় ও করণীয়

featured image

ঢাকা শহরে বসবাসরত প্রায় প্রতিটি মানুষেরই স্বপ্ন থাকে এই শহরে একটি স্থায়ী ঠিকানা গড়ার। নিজের একটি আবাস, যেখানে মাস শুরু হলেই কেউ ভাড়ার জন্য তাগাদা দেবে না। একটি মাথা গোঁজার ঠাঁই, যেখান থেকে কেউ কোনোদিন চলে যেতে বলবে না। যে বাড়িতে ইচ্ছে হলেই ছাদে যাওয়া যাবে, বাচ্চারা দেয়ালে আঁকিবুকি করলে কারো কাছে জবাবদিহি করতে হবে না। যেখানে একটার জায়গায় দুটো বাল্ব জ্বালালে কেউ ইলেক্ট্রিসিটি বিলের হিসাব কষতে আসবে না। 

এই চাওয়া বৈধভাবে রাতারাতি পূরণ করা সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম,সাধনা আর সঞ্চয়। চলুন, আজ জেনে নিই, এই স্বপ্নকে সত্যিতে রূপ দিতে হলে আপনাকে কী কী করতে হবে এবং কী কী বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

 

অর্থের সংস্থান

ঢাকায় ফ্ল্যাট কেনার ইচ্ছা থাকলে আপনাকে দীর্ঘদিন যাবৎ অর্থ সঞ্চয় করতে হবে। তাই এখন থেকে ফ্ল্যাটের দাম যাচাই করতে থাকুন এবং সেই অনুযায়ী অর্থ সঞ্চয় করতে শুরু করুন। বিশেষ প্রয়োজনে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ করতে পারেন। আজকাল অনেক প্রতিষ্ঠান বাড়ি কেনার জন্য ‘হোম লোন’ প্রদান করে থাকে৷ 

 

যাচাই-বাছাই 

শুধু টাকা থাকলেই হবে না, আপনাকে ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই কোনো নির্ভরযোগ্য রিয়েল এস্টেট কোম্পানী বাছাই করতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো বিখ্যাত কোম্পানীর ফ্ল্যাট কিনতে পারলে অবশ্যই ভাল। নামকরা, অভিজ্ঞ  রিয়েল এস্টেট কোম্পানীগুলো উন্নতমানের কাচামাল ব্যবহার করে, নিয়ম-কানুন যথাযথভাবে মেনে একেকটি বিল্ডিং নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করে থাকে।  আপনি কোনো প্রতিষ্ঠানের ফ্ল্যাট কিনতে আগ্রহী হলে তাদের সম্পর্কে কয়েকটি ব্যপার অবশ্যই জেনে নেবেন। যেমনঃ

 

প্রতিষ্ঠানটি রিহ্যাবের সদস্য কি না

রিহ্যাব অর্থ্যাৎ Real Estate & Housing Association of Bangladesh এর সদস্যপদ থাকা একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রিহ্যাবের সদস্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠান দেশের ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুযায়ী বিল্ডিং নির্মাণ করতে দায়বদ্ধ থাকে। তাই আপনি যে কোম্পানির ফ্ল্যাট কিনতে আগ্রহী, সেই কোম্পানিটি রিহ্যাবের সদস্য কি না, তা জেনে নিন। 

রাজউকের নিবন্ধন আছে কি না

বাংলাদেশে যদি কোনো কোম্পানি বৈধভাবে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা করতে চায় তাহলে অবশ্যই সেই কোম্পানীকে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) কর্তৃক নিবন্ধিত হতে হবে। তাই আপনি যে কোম্পানীর ফ্ল্যাট পছন্দ করছেন সেই কোম্পানীটির আদৌ কোনো রাজউক নিবন্ধন নাম্বার আছে কি না, তা সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইট থেকে যাচাই করে নেবেন। 

প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে কয়টি প্রজেক্ট সময়মতো হ্যান্ডওভার করেছে?

রিয়েল এস্টেট কোম্পানীর ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হল, সময়মতো একটি অ্যাপার্টমেন্টের কাজ শেষ করে তা ক্রেতাদেরকে বুঝিয়ে দেওয়া। আপনি যে কোম্পানির ব্যপারে আগ্রহী, তাদের ব্যপারে এই বিষয়ে  খোঁজখবর নিন। তারা সময়মতো কতগুলো কাজ শেষ করেছে, তা জানুন।  নাহলে হয়তো দেখা যাবে আপনি বিপূল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করে নিজের ফ্ল্যাটে বসবাস করার আশায় বসে থাকলেন। বছরের পর বছর গেল, কিন্তু, সেই সাধের ফ্ল্যাট আর বুঝে পেলেন না।     

দুরত্বের কথা বিবেচনা করুন 

পরিবারের সকলের সুবিধা-অসুবিধার কথা মাথায় রেখেই ফ্ল্যাট কোন এলাকায় কিনবেন তা নির্ধারণ করা উচিৎ। পরিবারের সদস্যরা কিভাবে নতুন বাসা থেকে স্কুল, কলেজ কিংবা কর্মস্থলে যাতায়াত করবেন তা অবশ্যই আগেভাগে চিন্তা করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এমন কোথাও ফ্ল্যাট কেনা একেবারেই অনুচিত যেখান থেকে অফিস-আদালত ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্ধারিত সময়ে গিয়ে পৌছানো অসম্ভব।

বাসার চারপাশের পরিবেশ লক্ষ্য করুন

বাসাটির আশপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কি না দেখে নিন। বিল্ডিংয়ের আশেপাশে ডোবা,নালা ইত্যাদি থাকলে সেখানে মশার উপদ্রব বেশি হয়। ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়ার মত প্রাণঘাতী রোগের ঝুঁকি এসব বাসায় বেশি থাকে। আশেপাশে কোনো নির্মানাধীন বিল্ডিং থাকলেও ডেঙ্গুর ঝুঁকি থাকে। বাসার ভেতরে যেমন গ্যারেজে পানি জমে থাকে কি না, নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় কি না এগুলো লক্ষ্য করতে হবে। ময়লা, স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে বসবাস করা স্বাস্থ্যের জন্য ভাল নয়।

সামাজিক পরিবেশ ও বাসার নিরাপত্তাব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করুন

ফ্ল্যাটটি যে এলাকায় অবস্থিত, সেখানকার সামাজিক পরিবেশ কেমন তা বোঝার চেষ্টা করুন। বিশেষ করে যে ফ্ল্যাটটি কিনতে চাচ্ছেন সেই বিল্ডিংয়ের আশেপাশে কী ধরনের স্থাপনা রয়েছে, কোন ধরনের মানুষ বসবাস করে, এই ব্যাপারগুলো বোঝার চেষ্টা করুন। বেশি হট্টগোলপূর্ণ পরিবেশে বিল্ডিংটি অবস্থিত হলে সেখানে পড়াশোনাসহ যেকোনো কাজই মনোযোগ দিয়ে করতে সমস্যা হবে। বাসার নিরাপত্তাব্যবস্থাও দেখে নিন। গেটে দারোয়ান কিংবা তালার ব্যবস্থা আছে কি না, যখন তখন অপরিচিত কেউ বিল্ডিংয়ে ঢুকে পড়তে পারে কি না এগুলো তীক্ষ্ণ চোখে খেয়াল করুন। অ্যাপার্টমেন্টের ক্ষেত্রে সিসি ক্যামেরা আছে কি না, সেগুলো কাজ করে কি না জানা প্রয়োজন।  বিল্ডিংয়ে চোরের উপদ্রব আছে কি না জানার চেষ্টা করুন। আশেপাশে মাদক বা অন্যান্য অসামাজিক কাজের আখড়া থাকলে সেই বাসা ভাড়া না নেয়াই নিরাপদ। যে বাসায় আপনার অনুপস্থিতিতে পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত নয়, যে বাসায় থাকলে আপনার সন্তান সঙ্গদোষে বিপথে যেতে পারে, সেই বাসা ভাড়া নেওয়া থেকে বিরত থাকুন।  

গ্যাস সরবরাহ দেখে নিন

ফ্ল্যাট কেনার আগে ফ্ল্যাটটিতে গ্যাসের লাইন আছে কি না অবশ্যই দেখে নিতে হবে। গ্যাসের লাইন না থাকলে সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করতে হবে।

পানির সরবরাহ সম্পর্কে জানুন

 ফ্ল্যাটটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে পানির সরবরাহ আছে  কি না অবশ্যই জেনে নিতে হবে। পানি সরবরাহ নিয়মিত হলেও পানি স্বাস্থ্যকর কি না, নিয়মিত পানির ট্যাংক পরিষ্কার করা হয় কি না ইত্যাদি জেনে নিতে হবে। প্রয়োজনে বিল্ডিংয়ে যারা বসবাস করছেন তাদের সাথে কথা বলুন। অনেকসময় দেখা যায় বাসার সবই ভাল, কিন্তু পানি স্বাস্থ্যকর না হওয়ায় নতুন বাসাটিতে ওঠার সাথে সাথেই নানা ধরণের অসুখ-বিসুখ শুরু হয়। বিশেষ করে বাচ্চারা পেটের পীড়ায় প্রায়ই আক্রান্ত হয়। তাই এই ব্যপারে আগেভাগেই খোঁজখবর নিন।

বিদ্যুৎ সরবরাহ দেখে নিন

বাসায় বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইন আছে কি না, নিয়মিত বিদ্যুৎ থাকে কি না, সেই ব্যপারে অবশ্যই জেনে নেবেন। 

এয়ার কন্ডিশনের ব্যবস্থা

আপনার যদি এক বা একাধিক এয়ার কন্ডিশনার থাকে, তাহলে অবশ্যই  ফ্ল্যাট কেনার আগে দেখতে হবে, ফ্ল্যাটটির কয়টি ঘরে এসি স্থাপনের ব্যবস্থা আছে। ফ্ল্যাটের ইলেক্ট্রিক্যাল ডিজাইন অনুযায়ী সব ঘরে এসি স্থাপনের ব্যবস্থা শুরু থেকেই থাকে না। এসব ক্ষেত্রে ইলেক্ট্রিক্যাল ওয়্যারিংয়ে বেশকিছু পরিবর্তন করে এসি স্থাপন করতে হয়। সম্ভব হলে এই ব্যপারে ফ্ল্যাটটি তৈরী হবার আগেই সংশ্লিষ্ট রিয়েল এস্টেট কোম্পানির প্রতিনিধির সাথে এই ব্যপারে বিস্তারিত আলোচনা করতে হবে।

ইলেক্ট্রিক্যাল ওয়্যারিং সংক্রান্ত কাজ 

শুধু এসিই নয়, আপনার একাধিক ফ্রিজ, কোনো ওয়াশিং মেশিন বা আইপিএস থাকলে সেটিও ইলেক্ট্রিক্যাল ওয়্যারিং এর সময় বিবেচনা করতে হবে। এতে ভবিষ্যতে ঝুঁকিপূর্ণ  এক্সটেনশন কর্ড ব্যবহারের প্রয়োজন হবে না।  শর্ট সার্কিটজনিত  দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা কমে আসবে।

গৃহপালিত প্রানীর ভালোমন্দ বিবেচনা

আপনার কোনো গৃহপালিত প্রানী যেমন কুকুর, বিড়াল ইত্যাদি থাকলে সেটির কথা ভুলে যাবেন না। কিছু কিছু অ্যাপার্টমেন্টে গৃহপালিত প্রাণী রাখার অনুমতি থাকে না, বাড়ির মালিকরাও এই নিয়ম মেনে চলতে বাধ্য থাকেন। এরকম অবস্থায়  দেখা যায় আপনাকে বাসা কিংবা নিজের আদরের পোষা প্রাণীটির মধ্যে যেকোনো একটিকে বেছে নিতে হচ্ছে৷ এরকম পরিস্থিতি এড়াতে  পোষা প্রাণী পালনে কোনো বাঁধা নেই, এমন কোনো অ্যাপার্টমেন্টে  ফ্ল্যাট কিনুন।  পোষা প্রাণী সাথে থাকলে বাসাটি ‘Pet protected’ করে নিতে হবে। নতুবা জানালা বা বারান্দা থেকে লাফ দেবার কারনে আপনার আদরের পোষা প্রাণীটির মৃত্যুও ঘটতে পারে। 

ফ্ল্যাটের অবস্থান দেখে নিন

বাসা নির্বাচনের ক্ষেত্রে বাসার অবস্থান অবশ্যই বিবেচনা করবেন। দক্ষিণমুখী বাড়িগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে বাতাস চলাচল করে। তাই দক্ষিণমুখী ফ্ল্যাটগুলোর চাহিদা সবসময়ই বেশি। অপরদিকে,পশ্চিমমুখী ফ্ল্যাটগুলোতে সুর্যের আলো সরাসরি এসে পড়ার কারনে ফ্ল্যাটগুলোতে গরম তুলনামূলকভাবে বেশি অনুভূত হয়। এসি না থাকলে এই ফ্ল্যাটগুলোতে বসবাস করা অনেকক্ষেত্রেই কষ্টদায়ক। 

ফ্ল্যাটটি কত তলায় অবস্থিত?

এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। একই বিল্ডিংয়েই একেক তলার মূল্য একেক রকম হয়ে থাকে। দোতলায় ফ্ল্যাট কিনলে কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। যেমন: জেনারেটরের শব্দ ও তেলের গন্ধ, পানির পাম্পের শব্দ ইত্যাদি। নিচতলা এবং দোতলায় চুরিও তুলনামূলকভাবে বেশি হয়।

ফ্ল্যাটটি যদি টপ ফ্লোরে অবস্থিত হয় তাহলে সেখানে গরম অনেক বেশি লাগে। তাই ফ্ল্যাট ভাড়া নেবার আগে এইসব সুবিধা-অসুবিধাগুলো বিবেচনা করতে হবে। 

শিশুদের জন্য কতখানি নিরাপদ?

ফ্ল্যাট কেনার আগে অবশ্যই বিবেচনা করবেন, সেখানে বসবাস করা আপনার শিশুর জন্য কতখানি নিরাপদ? যেমন, আপনার বাসায় যদি দুই-তিন বছর বয়সী শিশু থাকে, তাহলে এমন কোনো বাসা ভাড়া নেওয়া যাবে না, যেখানে ব্যালকনিতে কোনো রেলিং নেই। এই ধরনের বাসা আপনার অবুঝ শিশুর জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া সিঁড়ির গঠনের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। কিছু কিছু সিঁড়ির ডিজাইন শিশুদের চলাচলের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ। সিঁড়ির ডিজাইন বিপজ্জনক মনে হলে সেই বিল্ডিংয়ে ফ্ল্যাট কেনা থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন। 

ব্যক্তিগত স্বাচ্ছন্দ্য 

ফ্ল্যাটটিতে বসবাস করতে আপনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন কি না একবার ভাল করে ভেবে দেখুন। ধরা যাক, ফ্ল্যাটটি পাঁচ তলায় অবস্থিত, কিন্তু ওই বিল্ডিংয়ে কোনো লিফট নেই। এদিকে আপনি বা আপনার পরিবারের কোনো মানুষ হয়তো কোনো শারীরিক সমস্যার কারণে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে অসুবিধা বোধ করেন। এই অবস্থায় আপনার উচিৎ হবে বাসাটি ভাড়া না নেওয়া। পরিবারের সবার, বিশেষ করে বয়ষ্ক সদস্যদের স্বাচ্ছন্দ্যের কথা অবশ্যই চিন্তা করে বাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

 বাসায় ওঠার আগে সকল ইলেকট্রিক লাইন, প্লাম্বিং এর পাইপ, বাথরুমের ফিটিংস, দরজার লক ইত্যাদি ভালোমতো চেক করে নেবেন। কোনো সমস্যা থাকলে প্রয়োজনীয়  ব্যবস্থা নেবেন, যাতে করে আপনি বাসায় বসবাস শুরুর আগেই সমস্যাগুলো সমাধান করা হয়। 

জরুরি সেবাসমূহ

বিপদ কখনও আগে থেকে বলে আসে না। ফ্ল্যাট যেহেতু স্থায়ীভাবে থাকার জন্যই কেনা হচ্ছে সেহেতু আশেপাশে জরুরি সেবাগুলো পাওয়া যাবে কি না সেদিকে নজর দিতে হবে। কাছাকাছি কোনো হাসপাতাল আছে কি না, হঠাৎ প্রয়োজন পড়লে কাছাকাছি কোনো ওষুধ পাওয়া যাবে কি না এগুলো অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে। আশেপাশে দোকানপাটের সংখ্যা কিরকম, সেসব দোকানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাওয়া যায় কি না খেয়াল রাখতে হবে। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, যে এলাকায় ফ্ল্যাট কিনছেন সেখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা। কোথায় যাবার সময় ঘন্টার পর ঘন্টা যানবাহনের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, মেডিকেল ইমার্জেন্সির সময় একটা অ্যাম্বুলেন্স বাসার সামনে এসে দাঁড়াতে পারে না, এমন জায়গায় বাড়ি কেনা মোটেও সুবিধাজনক নয়। 

অন্যান্য সুবিধা

যে বিল্ডিংয়ে ফ্ল্যাট কিনছেন সেখানে লিফট, গাড়ি পার্কিংয়ের বন্দোবস্ত,  বাচ্চাদের খেলাধুলার ব্যবস্থা, কমিউনিটি হল   ইত্যাদি আছে কি না দেখে নিন। 

আইনী প্রক্রিয়াগুলো যথাযথভাবে সম্পন্ন করুন

যদি কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে ফ্ল্যাট কেনেন তাহলে, যার কাছ থেকে ফ্ল্যাট কিনচ্ছেন তিনি প্রকৃতপক্ষেই ফ্ল্যাটের মালিক কিংবা মালিক কর্তৃক অনুমোদিত ব্যক্তি কি না, তা নিশ্চিত হয়ে নিন। কোনও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ফ্ল্যাট কিনলে অবশ্যই সেই প্রতিষ্ঠানের অফিসে গিয়ে প্রয়োজনীয় সকল চুক্তি সম্পাদন করবেন।ফ্ল্যাট কেনার সময়  যে চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়, সেটি আগে ভাল করে পড়ুন। চুক্তির বিভিন্ন শর্ত, চুক্তির মেয়াদ ইত্যাদি ভালোভাবে খেয়াল করুন। সবকিছু দেখে, শুনে, ভাল করে বুঝে তারপর চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করুন। কারন, এসব ক্ষেত্রে ছোটখাটো ভুলের কারনে আপনি বড় ধরনের প্রতারণার শিকার হতে পারেন। 

ফ্ল্যাট কেনার সময় যে কাগজপত্রগুলো অবশ্যই যাচাই করতে হবে সেগুলো হচ্ছে-

  • জমির দলিল
  • নামজারি (মিউটেশন)  সার্টিফিকেট
  • সিটি সার্ভে
  • রাজউকের অনুমোদন
  • পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি (যদি প্রযোজ্য হয়)

যদি আপনি একটি সেকেন্ড হ্যান্ড ফ্ল্যাট কিনতে চান তাহলে আপনাকে পূর্ব মালিকানার দলিল,

রাজউক বিক্রয় অনুমতি, রাজউক সেলার মিউটেশ,এসি ল্যান্ড মিউটেশন, ইত্যাদি কাগজপত্র অবশ্যই যাচাই করে দেখতে হবে।

ফ্ল্যাট কেনার পর যার নামে  ফ্ল্যাটটি কেনা হয় তার নামে  রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। দ্রুত রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে ফ্ল্যাটটির রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করুন। 

শেষের কথা

পেশাগত জীবনের শুরু থেকে প্রস্তুতি নিতে শুরু করলে, সচেতনতার সাথে যাচাই-বাছাই এবং সকল আইনী প্রক্রিয়া বৈধভাবে সম্পন্ন করলে আপনিও হতে পারেন ঢাকা শহরে একটি সুন্দর, মনোরম আবাসস্থলের মালিক। নিজস্ব ফ্ল্যাটে আপনি সুখে-শান্তিতে এবং নিরাপদে বসবাস করবেন, এটিই আমাদের কাম্য। 

ভাড়া বাসা থেকে নিজের ফ্ল্যাটে শিফট করার দিন আপনার পাশে দাঁড়াবে Lalamove। বাড়ি বদলের ঝামেলাপূর্ণ কাজকে সহজ করতে Lalamove এর উপর আস্থা রাখা যায়।  Lalamove এর মাধ্যমে আপনি বাড়ি বদলের জন্য ট্রাক ভাড়া করতে পারেন।   আমাদের মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড করার পর মাত্র কয়েকটি ক্লিকেই নির্ধারিত দিনে আপনার বাসার সামনে হাজির হবে বাড়ি বদলের জন্য আপনার পছন্দসই ট্রাক। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী ১ থেকে ২ টন ট্রাক বা কাভার্ড ভ্যান ভাড়া করতে পারেন আমাদের অ্যাপের মাধ্যমে।  শুধু তাই নয়,আপনি ট্রাক ভাড়া করার সময়ই লোডিং-আনলোডিং এর জন্য যদি আপনার লেবার প্রয়োজন হয়, তাহলে আপনি অ্যাপের মাধ্যমে ট্রাক ভাড়া করার সময়ই বিষয়টি জানিয়ে দিতে পারবেন। আমরা আপনার চাহিদা অনুযায়ী যানবাহনের পাশাপাশি কর্মীর ব্যবস্থাও করব। ফ্ল্যাটটা আপনি শুধু কিনলেই হল, বাড়িবদলের ঝামেলা নিশ্চিন্তে ছেড়ে দিন আমাদের হাতে। 

Read more